-মানছুর আলম, কুবি প্রতিনিধি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির 'দুর্নীতির পক্ষে বক্তব্য' নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় দৈনিক যায়যায়দিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইকবাল মনোয়ারকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (২ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো: আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানায়।
দুর্নীতি বিষয়ে গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের 'নবীন বরণ ও বিদায়' অনুষ্ঠানে ভিসি বলেন 'অনেকেই বলেন দেশে দুর্নীতির কারণে উন্নয়ন হচ্ছে না। কিন্তু আমি বলব উলটো কথা। দেশে দুর্নীতি হচ্ছে বলেই উন্নতি হচ্ছে। এটা নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলতে পারেন। যে ঘুষ খায়, সে পদ্মা পাড়ে যায় ইলিশ খেতে। এতে পদ্মা পাড়ের গরীব মানুষেরা ধনী হচ্ছে। দুর্নীতি এভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখে। তাই অর্থনীতিবিদগণ দুর্নীতি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে না। তবে যারা পলিটিক্যাল ইকোনমি নিয়ে কাজ করে তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে থাকে। নৈতিকতার জায়গায়ও এটি প্রশ্নবিদ্ধ। তবে অর্থনীতির জায়গায় থেকে যদি বলি দুর্নীতি কখনোই উন্নয়নের জন্য বাঁধা নয়।’
অন্যদিকে অফিস আদেশে বিষয়টিকে অস্বীকার করে বলা হয়, গত ৩১ জুলাই, ২০২৩ ইং তারিখে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের 'নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠান এ মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এফ এম আবদুল মঈন এর বক্তব্যকে বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক প্রতিবেদন ও সুপারিশে ০২ তারিখে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সভায় অনুমোদিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।
এদিকে প্রক্টরিয়াল বডির সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা প্রাথমিক প্রতিবেদন দিয়েছি। তবে আমরা কোনো সাংবাদিককে বহিষ্কারাদেশের জন্য সুপারিশ করিনি। আমরা শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন আইনে বা নিয়মে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছেন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।
এ বিষয়ে প্রতিবেদককে উচ্চ পর্যায়ের সাথে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে তিনি কল কেটে দেন।
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সাথে একাধিক সংবাদকর্মী মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সাময়িক বহিষ্কৃত সাংবাদিক ইকবাল মনোয়ার বলেন, "আমাকে রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে কল দেয়া হলে আমি গিয়ে আমার বহিষ্কারাদেশ নিয়ে আসি, এর আগে আমার কাছে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন থেকে কোনো কিছু জানতে চাওয়া হয়নি। আর আমি সম্পূর্ণ তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করেছিলাম।"
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন