- লিখন ইসলাম, বাকৃবি প্রতিনিধি।
দুধেল গাভীর সাধারণত দুই ধরনের ওলান ফোলা বা ম্যাসটাইটিস রোগ হয় যাকে ক্লিনিক্যাল ও সাব ক্লিনিক্যাল পর্যায় বলে। লক্ষণ দেখে ক্লিনিক্যাল ম্যাসটাইটিস সহজে নির্ণয় করা গেলেও লক্ষণ প্রকাশ না করায় সাব ক্লিনিক্যাল ম্যাসটাইটিস সহজে নির্ণয় করা যায় না। সাব ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে এই রোগটি নির্ণয়ের জন্য দেশে ডিজিটাল যন্ত্রের ব্যবহার শুরু করা হয়েছে। যন্ত্রটির মাধমে দুধের বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা ও দ্রবীভূত মোট কঠিন পদার্থের পরিমাণ নির্ণয়ের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। যন্ত্রটি ব্যবহার করে মাঠ পর্যায়ে কম সময়ে, খুব সহজে ও সুলভ মূল্যে রোগ নির্ণয় সম্ভব।
ওলান ফোলা রোগ হলে গাভীর দুধের উৎপাদন কমে যায়। এতে খামারিদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। রোগ নির্ণয় করে সময়মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারলে খামারিরা বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতি থেকে মুক্তি পাবেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অনুষ্ঠিত ‘নিরাপদ দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার ডেইরি মিল্কে ওলান ফোলা এবং ঔষধ প্রতিরোধী জীবাণু সনাক্তকরণ এবং ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালায় এসব কথা বলেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক ও প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু হাদী নূর আলী খান। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন সম্মেলন কক্ষে ওই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় গবেষণা প্রকল্পের সহযোগী গবেষক ও প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মুনমুন পারভীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল। এছাড়া গবেষণার সাথে সংশ্লিষ্ট পিএইচডি ফেলো তাসনিয়া তাবাসসুম আনিকাসহ ভেটেরিনারি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. আবু হাদী নূর আলী খান বলেন, রোগটির প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে দুধ দুহানোর আগে ও পরে জীবাণুনাশকের সাহায্যে গাভীর ওলান পরিষ্কার করতে হবে। পরে শুকনো কাপড় দিয়ে ভেজা ওলান মুছে দিতে হবে। গাভীর জন্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন খামার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ম্যাসটাইটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। এবিষয়ে ডেইরি খামারিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি।
তিনি আরও বলেন, নিরাপদ দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বাংলাদেশ শিক্ষা, তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণায় গত দুই বছরে ৩৯টি খামারের মোট ১০০টি গাভীর ওপর ম্যসটাইটিসের জীবাণু শনাক্তকরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে ২৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ গাভীর ওলানের এক চতুর্থাংশ সাব ক্লিনিক্যাল ম্যাসটাইটিসে আক্রান্ত।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন