ফেসবুকে মিথ্যাচার; ব্যাখ্যা চেয়ে কুবি শিক্ষককে আইনি নোটিশ



মানছুর আলম, কুবি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের সংগঠন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিকে (কুবিসাস) নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার ভিত্তিহীন, মিথ্যাচার ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ইউসুফ আকাশের পক্ষে ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাব্রী সাবেরীন গালিব। গত বৃহস্পতিবার (১১ মে) এ চিঠি পাঠানো হলেও তা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছায় সোমবার।

নোটিশ প্রাপ্তির পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে মাহবুবুল হক ভূঁইয়াকে তাঁর মন্তব্যের জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় নোটিশ গ্রহীতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ২৫, ২৯ ও ৩১ ধারায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

নোটিশে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রাকে টেনে ধরতে গত ২০ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ফেসবুকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিকে নিয়ে ন্যাক্কারজনক, ঘৃণ্য, কল্পনাপ্রসূত ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করেন শিক্ষক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া। এর আগেও তিনি এ সংগঠনকে নিয়ে বিভিন্ন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর এহেন চরম মিথ্যাচার ও অপবাদের সঙ্গে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কোনো সদস্যের ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা নেই।

আইনি নোটিশের বিষয়ে আহমেদ ইউসুফ আকাশ বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা সর্বদা অন্যায় এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিক সমিতির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তারই অংশ হিসেবে এ সংগঠনের সদস্যদেরকে নিয়ে কল্পনাপ্রসূত, ভিত্তিহহীন, মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করেছেন এক শিক্ষক। তাঁর এসব মন্তব্যের সাথে কুবিসাস'র কোনো সদস্যের ন্যূনতম সংশ্লিষ্ট না থাকার পরও এমন দাবি তোলায় তাঁর কাছে আইনি ব্যাখ্যা চেয়েছি।

আইনি নোটিশ প্রেরণকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাব্রী সাবেরীন গালিব বলেন, আমার মোয়াক্কেলের সংগঠনকে নিয়ে  মাহবুবুল হক ভুঁইয়া আক্রমণাত্মক, মিথ্যাচার, ভীতি প্রদর্শন, মানহানিকর, মিথ্যা অপবাদ ও আইন-শৃঙ্খলা অবনতি করার জন্য ইচ্ছাকৃত ও জ্ঞাতসরে ফেসবুকে পোস্ট করেন। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে অপরাধ। তাই তার বিরুদ্ধে আমার মোয়াক্কেল আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য ৩০ দিনের মধ্যে ফেসবুকে পোস্ট করার কারণ জানতে চেয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে আমার মোয়াক্কেল ন্যায় বিচারের জন্য আদালতের দারস্থ হবেন।

নোটিশের বিষয়ে মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার মন্তব্য জানতে চেষ্টা করলে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। তিনি দেশের বাইরে থাকায় হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।

আইনি নোটিশের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, রেজিস্ট্রার, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী উকিল নোটিশের অনুলিপি গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তবে এ বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৭ মে একই মন্তব্যের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ভিসি বরাবর চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url