ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপে অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছেন হাবিপ্রবির মুন

স্কলারশিপ, student scholarship, HSTU NEWS, wikibangla news, special news, ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপে অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছেন হাবিপ্রবির মুন

 

ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপে অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছেন হাবিপ্রবির মুন
মাহমুদুল হাসান মুন

- তরু ,হাবিপ্রবি প্রতিনিধি 


হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ায় অবস্থিত ডেকিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পেয়েছেন। মাহমুদুল হাসান মুন নামের ওই শিক্ষার্থী পিএইচডি প্রোগ্রামে পড়ালেখা করার জন্য সুযোগ লাভ করেছেন। মুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং তার বাসা রংপুরে। অস্ট্রেলিয়া দূতাবাস থেকে ইতোমধ্যেই তার ভিসা গ্রহণ করা হয়েছে।


জানা গেছে, মুন গংগাচড়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ২০১২ সালে এসএসসি, কারমাইকেল কলেজ থেকে ২০১৪ সালে এইসএসসি পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০২১ সালে হাবিপ্রবি থেকে বিএসসি এবং ২০২৩ (রেজাল্ট প্রকাশিত হয়নি) সালে এমএসসি সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী এমএসসি প্রথম সেমিস্টারে অধ্যয়নরত অবস্থায় পিএইচডি স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এখন তিনি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।



বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সকলের পরিচিত মুখ মুন বিএসসি শেষে ইউনিভার্সিটি অফ ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি এর সিএসই ডিপার্টমেন্ট এর লেকচারার হিসেবে ১.৫ বছর শিক্ষকতা করেছেন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রথম সারির রিসার্চ অর্গানাইজেশন "গবেষক হতে চাই": Be Researcher BD এর একজন মডারেটর এবং বাংলাদেশের প্রথম রিসার্চ বুটক্যাম্পের ইন্সট্রাক্টর ছিলেন। তার ২০ টির অধিক গবেষণা প্রবন্ধ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নাল, কনফারেন্স এবং বুকে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও বেশ কিছু কাজ আন্ডার রিভিউয়ে আছে এবং পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের সাথে সহযোগিতামূলক রিসার্চ করছেন।


মাহমুদুল হাসান মুন বলেন, গবেষণা ভালো লাগায় নিজ ক্যাম্পাস এবং বাহিরের ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমি মাল্টিডিসিপ্লিনারি রিসার্চ ল্যাব (এম আর ল্যাব) শুরু করেছিলাম। ইতোমধ্যে ল্যাব থেকে আমার ১২ টির বেশি রিসার্চ আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে এবং অনেক কাজ রিভিউয়ে আছে। এর পাশাপাশি বর্তমানে পুরোদমে আমরা সবাই মিলে রিসার্চ করছি। মেশিন লার্নিংকে বিজ্ঞানের বিভিন্ন ফিল্ডে ছড়িয়ে দিতে আমার এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য চেষ্টা করবো।


তিনি জানান, সত্যি বলতে, ছোটবেলা থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল মেডিকেলে পড়ার। কিন্তু নাটকীয়ভাবে ভর্তি হয়ে যাই সিএসই বিভাগে। ভার্সিটির শুরুতে আমি কিছুই বুঝতাম না। ক্লাসের অন্যরা যখন প্রোগ্রামিং, একাডেমিক নিয়ে খুব ভালো করতো তখন আমি তাদের সাথে মানিয়ে নিতে পারতাম না। প্রথম সেমিস্টারে আমার প্রোগ্রামিংয়ের হাতেখড়ি হয় শ্রদ্ধেয় ড. পলাশ উদ্দিন স্যারের হাত ধরে। সেই শুরু থেকে স্যার আমাকে গাইডলাইন দিয়েছেন। আজকে আমি পিএইচডি করতে যাচ্ছি, এর পিছনে তার অবদান বলে শেষ করা যাবে না। আমার পিএইচডি স্কলারশিপের প্রতিটি পদে পদে তিনি সহযোগিতা করেছেন, হাতে কলমে সব কিছু শিখিয়ে দিয়েছেন। এখনও বট বৃক্ষের মত তিনি আমার প্রতিটি পদক্ষেপে অগ্রজ। 


ক্যাম্পাসের স্মৃতিচারণ করে মুন বলেন, আগামী ২ জুন দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে ক্যাম্পাস থেকে পুরোপুরি চলে এসেছি। ক্যাম্পাসের স্মৃতি গুলো এখনো চোখের সামনে ভাসছে। স্যার, ম্যাডাম, সিনিয়র, জুনিয়র, বন্ধু, স্থানীয় মানুষজন আমাকে খুব আপন করে নিয়েছিলো। আমার কত ভালোবাসা মনে হয় না ভার্সিটির অন্য কেউ পেয়েছে। এখন টার্গেট সফলভাবে পিএইচডি প্রোগ্রাম শেষ করা। আমি সবার কাছে দোয়া প্রত্যাশী।


তিনি অনুজদের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা বাহিরে এমএস বা পিএইচডি করতে চান তাদেরকে বলব ভালো সিজিপিএ এ ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি ভালো মানের কিছু পাবলিকেশন করা যায় তাহলে ফান্ড পেতে খুবই সহায়ক হয়। আপনারা স্যার বা বড় ভাইদের সাথে রিসার্চয়ে যুক্ত হয়ে নিজের প্রোফাইল রিচ করতে পারেন। কমিউনিকেশন স্কিল আর নেটওয়ার্কিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ ক্ষেত্রে। বাইরে যে সকল স্যাররা আছেন, বড় ভাই বোনেরা উচ্চতর ডিগ্রি নিচ্ছেন, তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করলে অনেক সুযোগ সম্পর্কে জানতে পারবেন। আর সব থেকে বড় কথা হলো নিজের মনের সুপ্ত ইচ্ছা জাগ্রত করতে হবে এবং সেই ইচ্ছা পূরণের জন্য পরিশ্রম করতে হবে সঠিক পথে।


উল্লেখ্য, ডেটা সায়েন্স ইন্সট্রাকটর হিসেবে ইউএসএ, ডেনমার্ক এবং ইতালিতে স্টুডেন্টদের অনলাইনে পড়ানোর পাশাপাশি সিএসই এর বিভিন্ন কোর্সের উপর ইউটিউবে তার ৪০০ এর অধিক ভিডিও টিউটোরিয়াল আছে।

কোন মন্তব্য নেই

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

© all rights reserved
made with by wikibangla.net